ভাগবত ও পুরাণ পাঠ

ভাগবত ও পুরাণ পাঠ :গৌর গদাধর সম্প্রদায় (সাটুই , মুর্শিদাবাদ)

Breaking

Post Top Ad

১৩ জুলাই ২০২৪

“হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য

 হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্যঃ ভাবের মাঝে কৃষ্ণ কথা হবে যে আলাপন। কৃষ্ণ বিনে কি আছে এ ভবে-সবই কৃষ্ণময় জেনে রেখো ভবে। উচ্চ স্তরে করেছে যাকে প্রতিষ্ঠা তিনি আর কেহ নন কৃষ্ণ বিনে। তাই মনুষ্য লোকের উচিত “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে পারমার্থিক জীবনে উন্নয়ণ ঘটানো। নিম্নে “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য কি তা বর্ণিত হলঃ 


হরে কৃষ্ণ  হরে কৃষ্ণ  কৃষ্ণ কৃষ্ণ  হরে হরে।

হরে রাম  হরে রাম  রাম রাম  হরে হরে।।


ষোল সখা ষোল সখী বত্রিশ অক্ষর । হরিনাম তত্ত্ব ধর্ম অতি গূঢ়তর।।

মাধুর্য মহিমা তত্ত্ব যে জন জানয়। রাধাকৃষ্ণ নিত্যধামে গমন করয়।।

‘হরে কৃষ্ণ’ ‘হরে রাম’ এই মন্ত্র ষড়ক্ষর। এই তিন নাম তন্ত্রে সূত্র কৈল হর।।

তিন নামে ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর। বৃত্তি করি কৈলা গৌর জগত গোচর।।

নাম রূপে প্রেম দিলা আপনি যাচিয়া। নামে মত্ত ভক্ত চিত্ত বেড়ায় নাচিয়া।।

করুণার কল্পতরু এই হরিনাম। কামনায় হবে মুক্তি প্রেম ব্রজধাম।।

সংক্ষেপে কহিনু এই হরিনাম তত্ত্ব। জীবের দুর্লভ এই প্রেমের মহত্ত্ব।।


অষ্ট ‘হরে’ নামের তাৎপর্য 

  • প্রথমত, ‘হরে’- চন্দ্রাবলী
  • দ্বিতীয়ত, ‘হরে’- প্রেমময়ী শ্রীরাধা
  • তৃতীয়ত, ‘হরে’- সুভাষিণী
  • চতুর্থত, ‘হরে’- সিংহাসন
  • পঞ্চমত, ‘হরে’- সুদর্শন
  • ষষ্ঠত, ‘হরে’- শেষ দেব
  • সপ্তমত, ‘হরে’- সাবিত্রী
  • অষ্টমত, ‘হরে’- রেবতী


চারি ‘কৃষ্ণ’ নামের তাৎপর্য

  • প্রথমত, ‘কৃষ্ণ’- পরম ব্রহ্ম শ্রীগোবিন্দ
  • দ্বিতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- বাসুদেব
  • তৃতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- জগন্নাথ
  • চতুর্থত, ‘কৃষ্ণ’- বলভদ্র
  • চারি ‘রাম’ নামের তাৎপর্য
  • প্রথমত, ‘রাম’- শ্রীরাধিকা
  • দ্বিতীয়ত, ‘রাম’- লক্ষ্মী
  • তৃতীয়ত, ‘রাম’- সরস্বতী
  • চতুর্থত, ‘রাম’- সুভদ্রা

হরিনাম মহামন্ত্রের বত্রিশ অক্ষরের তাৎপর্য

  • ‘হ’- অক্ষরে শ্রীললিতা সখী মস্তকেতে।
  • ‘রে’- অক্ষরে শ্রীবিশাখা দক্ষিণ বাহুতে।।
  • ‘কৃ’-অক্ষরে চম্পকলতা সখীকন্ঠে রয়।
  • ‘ষ্ণ’- অক্ষরেচিত্রা সখী বাহুতে শোভয়।।
  • ‘হ’- অক্ষরে রঙ্গদেবী সখী থাকে হাতে।
  • ‘রে’- অক্ষরে সুদেবী যে থাকয়ে পৃষ্ঠেতে।।
  • ‘কৃ’- অক্ষরে তুঙ্গবিদ্যা বদন উপরে।
  • ‘ষ্ণ’- অক্ষরে ইন্দুরেখা শ্রবণ বিবরে।।
  • ‘কৃ’- অক্ষরে শশীরেখা রহে ভুরুযুগে।
  • ‘ষ্ণ’- অক্ষরে বিমলা সখী ভ্রুর ডান ভাগে।।
  • ‘কৃ’- অক্ষরে পালিকা সখী ভ্রুর বামে রয়।
  • ‘ষ্ণ’- অক্ষরে লবঙ্গমঞ্জরী থাকয়ে হৃদয়।।
  • ‘হ’- অক্ষরে শ্যামলা সখী নাভীতে থাকয়।
  • ‘রে’- অক্ষরে মধুমতী নাভি মধ্যে রয়।।
  • ‘হ’- অক্ষরে ধন্যা সখী করাঙ্গুলি রয়।
  • ‘রে’- অক্ষরে মঙ্গলা কর অধোমুখী হয়।।
  • ‘হ’- অক্ষরে শ্রীদাম সখা জঙ্ঘায় থাকয়।
  • ‘রে’- অক্ষরে সুদাম সখা জানু নিবসয়।।
  • ‘রা’- অক্ষরে বসুদাম সাখা থাকে ভুরু অঙ্গে।
  • ‘ম’- অক্ষরে অর্জুন সখা সদা থাকে লিঙ্গে।।
  • ‘হ’- অক্ষরে সুবল সখা দক্ষিণ পদেতে।
  • ‘রে’- অক্ষরে কিঙ্কিণী সখা আছয়ে বামেতে।।
  • ‘রা’- অক্ষরে চাতক সখা পূর্বে নিবসয়।
  • ‘ম’- অক্ষরে মধুমঙ্গল অগ্নিকোণে রয়।।
  • ‘রা’- অক্ষরে শুক সখা থাকয়ে দক্ষিণে।।
  • ‘ম’-অক্ষরে বিশাল সখা রয় নৈঋর্ত কোণে।
  • ‘রা’- অক্ষরে মহাবল সখা পশ্চিমে থাকয়।।
  • ‘ম’- অক্ষরে বৃষভ সখা বায়ুকোণে রয়।
  • ‘হ’- অক্ষরে দেবপ্রস্থ সখা উত্তরেতে।।
  • ‘রে’- অক্ষরে উদ্ভব সখা আছে ঈশানেতে।।
  • ‘হ’- অক্ষরে মহাবাহু ঊর্ধ্বে রয় সুখে।
  • ‘রে’- অক্ষরে ঈশান সখা আছে অধোমুখে।।
  • এই ত কহিনু ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর তাৎপর্য ।
  • যেই জন জানে ইহা ভব ত্রাণ হয়।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Top Ad

Your Ad Spot