ভাগবত ও পুরাণ পাঠ

ভাগবত ও পুরাণ পাঠ :গৌর গদাধর সম্প্রদায় (সাটুই , মুর্শিদাবাদ)

Breaking

Post Top Ad

১০ জুলাই ২০২৪

ব্রজের ধূলার মাহাত্ম্য কি?

অঙ্গে মাখো মাখোরে, এই না ব্রজের ধুলা।

ওরে ধুলা নয়রে ধুলা নয়রে,  গোপি পদ্মরেণু।

সেই ধুলা বাঞ্চাকরে, ব্রজের রাইকানু।

অঙ্গে মাখো মাখোরে,  এই না ব্রজের ধুলা।


ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি, পরে গঙ্গার জলে।

গঙ্গা ও মুক্ত হয়, ভাগবদ বলে।

অঙ্গে মাখো মাখো হে, এই না ব্রজের ধুলা।


ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি, অঙ্গে মাখা যায়।

কটি জন্মের পাপ ছারিয়া, স্বর্গে চলে যায়।

অঙ্গে মাখো মাখো রে, এই না ব্রজের ধুলা।


ওরে সংকীর্তনের ধুলা যদি, লাগে পাপির গায়।

সেই পাপ নেচে নেচে, বৈকুণ্ঠেতে যায়।

অঙ্গে মাখো মাখো রে, এই না ব্রজের ধুলা।


ওরে সংকীর্তনের ধুলা নিয়ে, যে বা পথে যায়।

জলের কুমির বনের বাঘ, ভয়েতে পালায়।

অঙ্গে মাখো মাখো রে, এই না ব্রজের ধুলা।


ওরে সংকীর্তনের ধুলা রে ভাই, যে বা করে হেলা।

সর্ব্ব অঙ্গ নষ্ট হয়, চক্ষু হয় তার কানা।

অঙ্গে মাখো মাখো রে, এই না ব্রজের ধুলা।


ওরে শ্রীদাম নাচে সুদাম নাচে, নাচিতে লাগিলো।

মা যশোদা নেচে নেচে, কৃষ্ণ কোলে নিলো।

অঙ্গে মাখো মাখো রে, এই না ব্রজের ধুলা।


ব্রজের ধূলা সাক্ষাৎ গোপী পদরেণু, রাধারাণীর চরণ স্পর্শে অভিষিক্ত,

ইহার মহিমা তাই অনন্ত।

ভাগবতের দশম স্কন্ধে দেখা যায়,উদ্ধব,নারদ, ব্রহ্মা এই ব্রজে তৃণ গুল্ম পাথর হয়ে পরে থাকার বাসনা করলেন। শ্রীল প্রবধানন্দজী প্রার্থনা করেছেন কৃমি কীট হয়ে হলেও বৃন্দাবনে যেন বাস হয়, দেবতুল্য শরীর পেলেও অন্য জায়গায় যেন থাকিতে না হয়।যেথিয় গোপীদের পদরেণু সেথায় আমার গতি হোক।

এই ব্রজের ধুলার তিলক সাক্ষাৎ কৃষ্ণ প্রেমদায়ী। অসংখ্য ভক্ত নিধুবনের ধুলায়,গিরিগোবর্ধনের তটে, বরসনার গলিতে বা নন্দ গ্রামের মা যশোদার আঙিনার ধুলায় গড়াগড়ি দেন -সেই ধূলা পুটলিতে বেঁধে নিয়ে আসেন ও নিত্য অঙ্গে ধারণ করেন।  একসময় ওড়চা রাজা মধুকর শাহ ব্রজে গিয়েছিলেন হরিদাস স্বামীর সাথে দেখা করতে। তখন বাঁকে বিহারীজীর নিধুবনেথঠ ঘঢঘু ছিলেন। ওখানে প্রকট হয়েছিলেন হরিদাস স্বামীর ডাকে। মধুকর হরিদাসের কৃপাতে বিহারীজীর দর্শন করলেন। হরিদাস  তখন বিহারীজীর সেবাতে মাটির পাত্র ব্যবহার করতেন। মধুকর শাহ দেখলেন বিহারীজীর সেবাতে মাটির পাত্র। তিনি তখন হরিদাস স্বামীকে বললেন-আপনার আজ্ঞা হলে আমি বিহারীজীর সেবাতে সোনার তৈরি পাত্র দিতে চাই। হরিদাস স্বামী বললেন- তুমি যদি চাও করো। আগে বাঁকে বিহারীজীর কাছে গিয়ে অনুমতি নাও।

তখন রাজা বাঁকে বিহারীর কাছে গেলেন, আর মাটির পাত্রের দিকে তাকালেন  -দেখলেন মাটির গায়ে অসংখ্য হীরা মণি রত্ন সোনা শোভা পাচ্ছে,আবার বিলীন হয়ে যাচ্ছে -এ যে চিন্ময় মাটি! রাজা বুঝিলেন -ব্রজের ধূলা সাধারণ কিছু না,এতে এমন রত্ন আছে যা রাজা কোনদিন দেখে নি -কৃষ্ণ প্রেম রত্ন দিয়ে গড়া। মাটি পাত্র মনে করেছিল যাকে রাজা, তা তো রত্ন পাত্র -সত্যিই প্রেম রত্ন পাত্র। ব্রজের রজের মহিমা দেখে তাঁর মনের ভুল দূর হল।তিনি হরিদাস স্বামীর কাছে আসলেন। 

হরিদাস বললেন--রাজা ব্রজের ধুলা কোনো সাধারণ ধুলা না,ওতে যে সোনা, রত্ন আছে ।আজও এই ধূলোর তৈরি পাত্রে ভগবানের সেবা হয়।বাকেঁবিহারীজী সেই ধূলো তৈরির পাত্রে জল পান করে। এই মাটি ভগবানের খুবই প্রিয়।যশোদার প্রিয় গোপাল এই মাটি খেয়েছিলেন -কারন এই মাটি প্রেমভক্তি দিয়ে গড়া।এই ব্রজের রজ দেবাদিদেব মহাদেব ব্রহ্মা ইন্দ্র আদি দেবতারাও অঙ্গে ধারন করেন।সত্যিই তারা ভাগ্যবান যারা ব্রজের ধুলায় গড়াগড়ি দিতে পেরেছেন,ধন্য তাদের ভজন জীবন ।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Top Ad

Your Ad Spot